‘আ.লীগ সরকারই স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রধান বাধা
মো: নূরুল মুত্তাকিন ঃক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রধান বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাদের গদি রক্ষায় আজকে দেশকে বাজি ধরেছে। কাজেই দেশকে রক্ষায় দেশবাসীকে আরও ঐক্যবদ্ধ বিশাল আন্দোলন এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (২৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে দলটির উদ্যোগে ‘জনগণের মুক্তির সংগ্রাম এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াই’- শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নেতারা।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে এবং রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন; গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফাইজুল হাকিম লালা এবং গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।
নেতারা বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজকে দেশে ভোটাধিকার নেই। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়ে তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোচ্চুরি ও ভোট ডাকাতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই ভোটবিহীন নির্বাচনগুলো সরকার সংবিধান রক্ষার দোহাই দিয়ে করে ফেলেছে। কাজেই সংকটের মূলেই বিদ্যমান সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো। এই ক্ষমতা কাঠামোয় ন্যূনতম কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থা নেই। অসীম ‘গণবিরোধী’ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অতীতের সকলে এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় পরিণত করেছে। ক্ষমতাকে নিজেদের জমিদারি মনে করছে।
প্রধানমন্ত্রীর এক সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ ধরে তারা বলেন, খ্রিষ্টান রাষ্ট্র কারা করতে চায়? কারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি- এই তথ্য দেশবাসীকে জানাতে হবে। আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রধান বাধাই এই সরকার। এই আওয়ামী লীগ সরকার তাদের গদি রক্ষায় দেশকে বাজি ধরেছে। কাজেই দেশকে রক্ষায় দেশবাসীকে আরও ঐক্যবদ্ধ বিশাল আন্দোলন এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সরকার বদল এবং শাসন ব্যবস্থা বদল আজকে একাকার হয়ে গেছে। এই শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার, নাগরিক মর্যাদা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সম্ভব নয়। ফলে একটি নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের লক্ষ্য সামনে নিয়ে চলমান অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে বিজয়ী করতে হবে।
প্রয়াত অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজীবন সংগ্রামী আবদুস সালাম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলনসহ সকল ধরনের আন্দোলনে তার পুরো জীবন ব্যাপৃত রেখেছিলেন। তিনি দেশের জাতীয় রাজনীতিতে ’৭২ এর সংবিধানের নানা পর্যালোচনা হাজির করেছিলেন এবং তিনি গণতান্ত্রিক সংবিধান বাস্তবায়নের প্রশ্নটিকে মুখ্য প্রশ্ন হিসেবে তুলেছিলেন। আমরা মনে করি, জনগণের মুক্তির সংগ্রামে আবদুস সালামের ভূমিকা টিকে থাকবে এবং তাকে সংগ্রামের মাঝেই স্মরণ করব।