সিলেটসহ তিন সিটিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত বিএনপির!
নিউজ ডেস্ক:: সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী। এই তিন সিটিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মেয়র পদে ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী ১৭ জনের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় দলের মনোনয়ন বোর্ড সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু করে, চলে প্রায় রাত ৮টা পর্যন্ত।
এমন তথ্য জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শাইরুল কবীর খান বলেন, ‘সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
তবে দলীয় সূত্র বলছে, তিন সিটিতেই বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা ঘোষণা করা হবে।
সূত্র আরও জানায়, সিটি নির্বাচন নিয়েই বিএনপির নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত রয়েছে। মেয়র হিসেবে যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরই অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তবে বরিশালের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। আহসান হাবিব কামালের পরিবর্তে সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের প্রাধান্য বেশি। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনও মেয়রপদে দলীয় মনোয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১০ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এদের মধ্যে নয়জন জমা দিয়েছেন। বরিশাল জেলা যুবদলের সভাপতি পারভেজ আকন্দ বিপ্লব মনোনয়ন জমা দেননি। তবে তিনি দলের আমন্ত্রণে সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
মনোনয়ন ফরম জমা না দেয়া প্রসঙ্গে বিপ্লব বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে জমা দেইনি।’
মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন কিন্তু সেটা কেন জমা দেননি- এর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সমস্যা কৌশলগতভাবে চলতে হয়। এখানে অনেক সিনিয়র আছেন।’
তবে সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের পর বিপ্লবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মনোনয়নপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ‘দলের মনোনয়ন বোর্ড আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তবে দল কাকে মনোনয়ন দেবে সেই বিষয়ে কেনো সিদ্ধান্ত এখনও আমাদের জানায়নি।’
কখন জানাবে? কী বলেছে জানতে- চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু বলেছে, পরে জানানো হবে।’
বরিশালের মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আশা করছি মেয়রপদে দলীয় মনোনয়ন পাবো। আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলাম, আছি, থাকবো। মনোনয়ন না পেলে দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবো।’
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে আরও যারা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশালের বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামাল, সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবাদুল হক চান, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহীন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন। বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বর্তমানে মহানগর বিএনপি নেতা হায়দার বাবুল।
রাজশাহীর একমাত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান মেয়র ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন।
সিলেটে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সহ-সভাপতি ও প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও মহানগর নেতা ছালাহউদ্দিন রিমন।
সাক্ষৎকার শেষে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে সিলেট সিটি মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ‘আমরা সিলেটের সব মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দিতে দলের নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করেছি। কারণ তিনি এখন আর বিএনপির নেতা নন। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে রাজনীতি করেন। দলের কোনো কর্মসূচিতে তাকে পাওয়া যায় না। তাই তার বাইরে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা সবাই তার পক্ষ হয়ে নির্বাচনে কাজ করবো বলে এসেছি।’
সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৮ জুন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৯ জুলাই পর্যন্ত।