অবশেষে কে হচ্ছেন জেলা পরিষদের প্রশাসক!
সুরমার ডাক :
সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক হতে শুরু হয়েছে লবিং আর দৌড়যাপ। তাই অবশেষে কে হচ্ছেন জেলা প্রশাসক ? তা নিয়ে শুরু হয়েছে কৌতুহল। তবে প্রশাসকের তালিকায় একাধিক নাম থাকলেও মূল আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমান) শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ।
১৭ এপ্রিল মেয়াদোত্তীর্ণের পর জেলা পরিষদে প্রশাসক বসানোর সুযোগ সৃষ্টি করে সরকার। সব ধাপ শেষ করে সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনের গেজেট গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে ৬১টি জেলা পরিষদের মেয়াদ প্রথম সভার তারিখ থেকে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় পরিষদগুলো বিলুপ্ত করা হয়। একই সাথে জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের আগে প্রত্যেক জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ওইদিনই সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দিপ কুমার সিংহকে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম প্রশাসক মনোনীত হন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। নি:সন্তান সুফিয়ান চৌধুরী ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন। ২০১৫ সালের ০৯ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করলে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সিলেট জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের দায়িত্ব লাভ করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। পরবর্তীতে শুন্য পদে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে শফিকুর রহমান চৌধুরীর পর বেশি করে নাম উচ্চারিত হচ্ছে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের। অনেকের ধারণা,ত্যাগী এবং কর্মঠ বিবেচনায় প্রশাসক হিসেবে স্থান পেতে পারেন অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমান) শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল সবার কাছে আলোচনায়।
সিলেট জেলা বারের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন বলেন, জেলা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এবং পরবর্তী পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত সরকার একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। জেলা পরিষদ আইনের ৮২ ধারার ০২ উপধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। ফলে সরকার যে কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।
সুুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জেলা পরিষদের মাধ্যমে বিগত কি কাজ করা উচিত এবং কি কি কাজ করা হয়েছে-তার একটি তথ্য উপস্থাপন করা ছিল জরুরী। পরিষদ আছে,তাকে কাজে লাগাতে হবে। আর কাজ করতে হলে দলীয় লোকের বাহিরেও অনেক যোগ্য মানুষ রয়েছেন। সুতরাং দলকেন্দ্রীক না করে পরিষদ এবং তার কার্যক্রম তুলে ধরতে হলে গ্রহণযোগ্য এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে পারে সরকার।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক জেলায় একজন চেয়ারম্যান, ১৫ সদস্য ও ৫ নারী সদস্য অর্থাৎ মোট ২১ সদস্যের পরিষদ রয়েছে। আইন অনুযায়ী জেলার অন্তর্গত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কাউন্সিলররা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা জেলা পরিষদের ভোটার।