স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিংয়ে হিরো আলমের উপর আক্রমণ, বিএনপি কর্মীর বাড়িতে হামলা
NURUL MUTTAKIN:: ঢাকা-১৭ আসনে উপ নির্বাচনে স্বত্রন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিএনপি কর্মীর বাড়িতে ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হামলা কিংবা সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
এমন সহিংসতার স্থান নেই, আমরা অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণে রেখেছি: যুক্তরাষ্ট্র
সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি এবং বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের কর্মীদের অব্যাহত হামলা প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এই মুখপাত্র বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরতে আরও বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবে।
ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “যুক্তরাষ্ট্রের সিভিলিয়ান নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকা সফর শেষে ফেরার পরপরই বাংলাদেশে সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং সভা-সমাবেশে বাধা ও হামলার পুরোনো রুপে ফিরেছে। গতকাল (সোমবার) ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতীতে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিরোধীদল এই নির্বাচনগুলো বয়কট করেছে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র এক প্রার্থী (হিরো আলম)’র ওপর হামলা করেছে ক্ষমতাসীনরা এবং তিনি হামলার পর হাসপাতালে স্থানান্তরিত হয়েছেন। নির্বাচনে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষও ভোট দেয়নি।
এমন বাস্তবতায় আপনি কীভাবে বিশ্বাস করবেন যে, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব? কারণ ২০১৪, ২০১৮ এর নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি। এমনকি এই উপ নির্বাচনগুলোও না। এ নির্বাচনে প্রার্থীরা হামলার শিকার হয়েছে।”
জবাবে মিলার বলেন, “আমি বলবো-গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমি বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানাবো, সহিংসতার যেকোনো ঘটনা বিশদভাবে, স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্ত করতে। যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি যেটা বলবো, যেমনটা এর আগেও আমরা বলেছি-বাংলাদেশ সরকার অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবো।”
নিউইয়র্কে বাংলাদেশে ভোটের দাবি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমপি শামিম ওসমানের সামনে বিক্ষোভ করায় বিএনপি এক কর্মীর বাড়িতে ছাত্রলীগের বোমা হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই সংবাদদাতা জানতে চান, “গত বুধবার রাতে নিউইয়র্কে বিরোধী দলের এক কর্মী (বাদল মির্জা) সরকারদলীয় এমপি (শামীম ওসমান)’র সম্মুখে বাংলাদেশে ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন এবং তর্কে জড়িয়েছিলেন। এঘটনার কয়েক ঘন্টার পরই বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওই কর্মীর বাড়িতে তার পরিবারের সদস্যদের উপর অতর্কীত হামলা চালানো হয়। এসময় সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের ফেসবুক লাইভে বলতে শোনা যায়- যারা দেশের বাইরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে তারা হামলা করে এই জবাব দিচ্ছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রে বসে সরকারের সমালোচনা করছে দেশে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নেই। এব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?”
জবাবে মিলার বলেন, “আমি আবারও আগের কথার পুনরাবৃত্তি করে বলবো-যে ধরনের হামলার কথা আপনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এর কোনো জায়গা নেই।”
এর আগে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিংকেন স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রদূতদের অনুমোদনে সিনেট কর্তৃক দীর্ঘসূত্রিতা অবসানের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং পাসপোর্ট ও ভিসা জটিলতা অবসানে তার প্রশাসনের অগ্রাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তথ্য লিংক : সাংবাদিক Mushfiqul Fazal Ansarey